ইতালির নতুন সীমানা, কিছু এলাকা যাচ্ছে সুইজারল্যান্ডে

হিমবাহের বরফ গলে যাওয়া বা স্থানান্তরিত হওয়ার সূত্রে প্রতিবেশীর সঙ্গে ইতালির বিরোধ-বিতর্কের ঘটনা আগেও ঘটেছে। তবে এবার সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে সমঝোতায় রাষ্ট্রীয় সীমানা পুনঃনির্ধারণ করছে দেশটি। প্রাকৃতিক পরিবর্তনের কারণে রাষ্ট্রর সীমানা পরিবর্তনের এই সিদ্ধান্তের পেছনে স্থানীয় অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনারও গুরুতর সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের সীমানায় অবস্থিত ম্যাটারহর্ন পর্বত এলাকায় নতুন সীমানা কার্যকর হয়েছে।

সুইজারল্যান্ড সীমান্তে পর্বত
ছবি: আর্তেম লিসেঙ্কো

আলপাইন অঞ্চলে ইতালি ও সুইজারল্যান্ডের সীমানা আগে থেকেই ম্যাটারহর্ন পর্বতে নির্ধারিত ছিল। মূলত পর্বতের চূড়াই দুই দেশের সীমান্ত হিসেবে গণ্য হতো। এছাড়া বরফ গলা নদীও দেশ দুইটির সীমানা হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বরফ গলতে গলতে হিমবাহের আকৃতি পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে।

সুইজারল্যান্ডের সরকারি দপ্তরের হিসেব মতে ২০২২ ও ২০২৩ সাল জুড়ে, মাত্র দুই বছরে, যে পরিমাণ বরফ সেখানে গলেছে তা হিমবাহটির মোট আয়তনের ১০ শতাংশ। এই পরিমাণ বরফ আগে গলেছে ১৯৬০ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে, ৩০ বছর জুড়ে।  হিমবাহের চূড়াকে কেন্দ্র করে যে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা তা দুই দেশের স্থানীয় অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য জরুরি।

আলপাইন অঞ্চলে সুইজারল্যান্ড-ইতালির জন্য পর্যটন একটি বড় আয়ের উৎস। বছরে ২০ লাখের মতো পর্যটক সেখানে যায়। স্কিইং পর্যটকদের অন্যতম প্রধান আগ্রহের বিষয়। আর; স্কিইং ট্র্যাক রক্ষণাবেক্ষণে দুই দেশকেই ভূমিকা রাখতে হয়। সীমান্ত পুনঃনির্ধারণের এই সিদ্ধান্তের পেছনে সেটা একটা বড় কারণ। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে সুইজারল্যান্ড নিজের সীমানায় কিছু এলাকা বেশি পাবে।

হিমবাহকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে আগে কিছু মাত্রায় বিরোধ-বিতর্ক হয়েছে ইতালির। মন্ট ব্লঙ্ক পর্বত এলাকায় হিমবাহের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে দেশটির মতবিরোধ হয় ২০১৫ সালে। সে সময় ইতালির প্রায় ১৫০ মিটার ভেতরে ঢুকে সীমানা পিলার বসিয়েছিল ফ্রান্স। এছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হিমবাহের পরিবর্তন ঘটায় ২০০৬ সালে অষ্ট্রিয়ার সঙ্গে সীমান্ত সংক্রান্ত চুক্তি করেছিল ইতালি।