যুক্তরাষ্ট্রের আইন মন্ত্রণালয় গুগলের কাছ থেকে ক্রোম ব্রাউজারের মালিকানা-কর্তৃত্ব সরিয়ে নিতে আদালতে যচ্ছে। তাদের অভিযোগ, ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহার করে সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে একচেটিয়া আধিপত্য তৈরি করছে গুগল, যা কার্যত বিজ্ঞাপন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটিকে মনোপলির সুযোগ এনে দিয়েছে।

একচেটিয়া ব্যবসার এমন অভিযোগ এর আগে মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে উত্থাপিত হয়েছিল। ডিফল্ট হিসেবে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারকে রাখার কারণে মাইক্রোসফট, ব্রাউজার ব্যবহারের ক্ষেত্রে মনোপলি সুবিধা ভোগ করছে এমন অভিযোগ করা হয়েছিল। এই মামলার প্রেক্ষিতে মাইক্রোসফট আমেরিকায় ২০০১ সালের দিকে উইন্ডোজ ইন্সটল করার সময় ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের পাশাপাশি অন্য ব্রাউজার ব্যবহারের সুযোগ স্পষ্ট করতে বাধ্য হয়। ২০১০ সালের দিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে একই রকম এক মামলার রায়ের পর মাইক্রোসফট ব্যবহারকারীকে ডিফল্ট ব্রাউজার বেছে নেওয়ার সুযোগ দেয়। এটি তখন ব্রাউজার ব্যালট নামে পরিচিতি পেয়েছিল।
ডিফল্ট সার্চ হিসেবে ক্রোম ব্রাউজারে গুগল সার্চের অন্তর্ভুক্তির বিরুদ্ধে আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস যে আদালতে অভিযোগ তুলতে যাচ্ছে সেই আদালত আগেও সার্চ ইঞ্জিন বিষয়ে একচেটিয়া ব্যবসার অভিযোগে গুগলের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। গত আগস্ট মাসের রায়ে বিচারক অমিত মেহতা বলেছিলেন, ক্রোম ব্রাউজারে যখন ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে গুগল সার্চ দেওয়া থাকে তখন অন্য সার্চ ইঞ্জিনগুলোর সুযোগ প্রায় শূন্য হয়ে যায়। কারণ বেশিরভাগ ব্যবহারকারী ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন পরিবর্তন করে অন্য কোনও সার্চ ইঞ্জিনে যায় না। এতে সার্চের মার্কেটে গুগলের একচেটিয়া দখল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ফলশ্রুতিতে আনলাইন বিজ্ঞাপনের বাজারেও এই নিয়ন্ত্রণ প্রসারিত হয়েছে।
রায়ে বলা হয়েছিল, ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হওয়ার কারণে গুগল তার বিজ্ঞাপন আয় সবচেয়ে বেশি নিশ্চিত করতে পেরেছে। এই ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হওয়ার সুবিধা এতটাই জরুরি যে বিভিন্ন ডিভাইস ও পরিষেবায় গুগল সার্চের ডিফল্ট অবস্থান নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠানটি ২৬ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে ‘রেভিনিউ শেয়ার’ হিসেবে। গুগলের দিক থেকে দেখলে, সার্চ সংক্রান্ত অন্য সব খরচের প্রায় চার গুন এই রেভিনিউ শেয়ারের পরিমাণ যা অন্য ডিভাইস বা পরিষেবার মালিকদের দিতে হয়েছে তাদের ডিভাইস বা পরিষেবায় গুগলে সার্চকে ডিফল্ট সার্চ করে রাখার জন্য।