মন্দিরে নিম্নবর্ণের প্রবেশ, ক্ষোভে মূর্তি অপসারণ

ইন্ডিয়ার কর্ণাটক রাজ্যে এক মন্দিরে প্রবেশের অধিকার নিয়ে বিবাদে জড়িয়েছে উচ্চ ও নিম্ন বর্ণের দুই দল স্থানীয় হিন্দু। বিবাদের জেরে উচ্চ বর্ণের হিন্দুরা মন্দিরের দেবমূর্তিটিকে সরিয়ে নিয়ে যায়। নিম্ন বর্ণের হিন্দুদের অধিকার নিশ্চিতে হস্তক্ষেপ করে স্থানীয় প্রশাসন। ক্ষোভে উচ্চ বর্ণের হিন্দুরা মন্দিরের সাইনবোর্ডও ভেঙে ফেলে।

Kalabhairaveshwara temple
ছবি: টেম্পলস অফ ইন্ডিয়া

এ ঘটনা গত ১০ই নভেম্বরের। কর্ণাটক রাজ্যের মান্ডিয়া গ্রামের শ্রী কালাভৈরবেশ্বর নামের মন্দিরটি শতাব্দী প্রাচীন। বছর দুই আগে এটি সংস্কার করা হয়েছিল। তারপর এটিকে সরকারি সংস্থার অধীনে নিয়ে যাওয়া হয়। মন্দিরটি যে এলাকায় অবস্থিত সেখানে ‘আদি কর্ণাটক’ নামে পরিচিত দলিত শ্রেণির বাস। তাদের পাশাপাশি আছে উচ্চবর্ণের হিন্দু, যাদের নাম ভোক্কালিগা।

‘আদি কর্ণাটক’ সম্প্রদায় কালাভৈরবেশ্বর মন্দিরে পূজা-অর্চনার জন্য প্রবেশের ঘোষণা দিলে গত ৯ নভেম্বর ভোক্কালিগা হিন্দুরা তাদের প্রতিরোধের ঘোষণা দেয়। তারা নিজেদের সম্প্রদায়ভুক্ত প্রত্যেকের বাড়ি থেকে একজন করে লোক মন্দির পাহারা দেওয়ার জন্য ডেকে পাঠায়। পরের দিন ‘আদি কর্ণাটক’ সম্প্রদায় মন্দিরে প্রবেশের জন্য উপস্থিত হলে তারা বাধা দেয়।

উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে পুলিশ এবং প্রশাসনের উপস্থিতিতে নিম্নবর্ণে হিন্দুরা শ্রী কালাভৈরবেশ্বর মন্দিরে প্রবেশ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উচ্চবর্ণের হিন্দুরা মন্দিরে অধিষ্ঠিত দেবমূর্তিটি সরিয়ে নেয়। ক্ষোভের বশে এক সময় তারা মন্দিরের সাইনবোর্ডও ভেঙে ফেলে।

উচ্চবর্ণের হিন্দুদের দাবি শত বছর ধরে যে প্রথা চলে আসছে তা তারা ভাঙতে চায় না। এছাড়া, দলিতদের জন্য গ্রামে অপর একটি মন্দির আছে। এরপরও যদি নিম্নবর্ণের হিন্দুরা মন্দিরে প্রবেশ করে তাহলে তারা মন্দির ছেড়ে দেবে কিন্তু তাদের দেবমূর্তিটি সেখানে রাখবে না।

দলিত অধিকারের জন্য কাজ করা স্থানীয় একজন নেতা ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে’ বলেছেন, ‘শত বছর ধরে নিম্নবর্ণের হিন্দুদেরকে মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। কিন্তু পৃথিবী বদলেছে। সবাইকে স্বীকার করতে হবে, আমরাও মানুষ এবং আমাদেরও অধিকার আছে।’

শেষ পর্যন্ত পুলিশ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সমঝোতা আলোচনা হয় এবং দেবমূর্তিটিকে আবার মন্দিরে ফেরত নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু দলিত সম্প্রদায়ের হিন্দুদের ভাষ্য, সরকারি চাপের কারণে সমঝোতা মেনে নিয়েছে ‘ভোক্কালিগা’, আসলে তারা সমঝোতা চায় না।