খনিতে আটকা শ্রমিক, রসদ বন্ধ পুলিশের, হস্তক্ষেপ আদালতের

দক্ষিণ আফ্রিকা একটি পরিত্যক্ত সোনার খনিতে আটকে আছে শতাধিক শ্রমিক। খনিটি মাটির আড়াই কিলোমিটার গভীরে অবস্থিত। অবৈধ তৎপরতার কথা উল্লেখ করে শ্রমিকদের রসদ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ। দেশটির আদালতের হস্তক্ষেপে সিদ্ধান্ত বদলেছে সরকার।

ছবি: ডিসিএসটিএম সাউথ আফ্রিকা

স্টিলফন্টেইন দক্ষিণ আফ্রিকার একটি শহর। সেখানকার একটি পরিত্যক্ত সোনার খনিতে অবৈধভাবে খননকার্য চালাতে প্রবেশ করে শতাধিক শ্রমিক। এই খনিটি মাটির প্রায় আড়াই কিলোমিটার গভীরে অবস্থিত। কিন্তু খননকার্য অননুমোদিত হওয়ায় নভেম্বরের শুরুর দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ জায়গাটি ঘিরে ফেলে এবং মাটির উপর থেকে খনির ভেতরে শ্রমিকদের জন্য রসদ পাঠানোর ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়। পুলিশের দাবি, খাবার-পানি বন্ধ করে দিলে  খনির ভেতর থেকে তারা বেরিয়ে আসতে বাধ্য হবে। উদ্ধারকারীদেরও খনির ভেতরে যেতে পুলিশ বাধা দিয়েছে। পুলিশের দাবি, খননকারীদের অনেকের কাছে অস্ত্র থাকতে পারে। উদ্ধারকারী পাঠালে হতাহতের সম্ভাবনা আছে। 

কয়েক সপ্তাহ ধরে খনির ভেতরে থাকা শ্রমিকদের রসদ বন্ধ থাকায় আতঙ্কিত স্বজনরা ভিড় করে খনির চারপাশে। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কায় শ্রমিকরা খনি থেকে বের হয়ে আসছে না। এক পর্যায়ে মানবাধিকার কর্মীরা বিষয়টি আদালতের নজরে নিয়ে আসেন।

১৭ নভেম্বর প্রিটোরিয়া হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ আটক শ্রমিকদের রসদ সরবরাহের আদেশ দেয়। এই আদেশের পরে তাৎক্ষণিকভাবে স্বেচ্ছাসেবকরা খনির ভেতরে রসদ পাঠাতে থাকেন। আদালতের রায়ে খনি এলাকা ঘিরে রাখা পুলিশ বাহিনীকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় যাতে আটকে পড়া শ্রমিকদের কেউ বেরিয়ে আসতে চাইলে বাধাপ্রাপ্ত না হয়।

পরিত্যক্ত খনিতে অবৈধ খনন কাজ চালাতে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার এসব শ্রমিকদেরকে জামা জামা নামে ডাকা হয়। সংঘবদ্ধ চক্র হিসেবে আখ্যায়িত করে এক্সে এদের তথ্য চেয়ে পোস্ট করেছে দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ। তাদের মূল বক্তব্য, এই ধরনের অবৈধ তৎপরতার ফলে ভূমিধসের মতো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

কিন্তু মানবাধিকার কর্মীরা রয়টার্সকে বলেছেন, জামা জামা নামে পরিচিত খননকারীরাও মানুষ। মানবাধিকার লঙ্ঘন করে পুলিশ তাদের কয়েক সপ্তাহ ধরে রসদ বঞ্চিত করে রাখতে পারে না। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা আইন প্রয়োগের সময় পুলিশকে মানবাধিকারের কথা মাথায় রাখতে বলেছেন।